নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় হাইরাইজ ভবনগুলি ইমারত নির্মাণ বিধিমালা লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ নগরীর অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত আল্লামা ইকবাল রোডের হাইরাইজ বিল্ডিংগুলির বিরুদ্ধে। মেয়র সোমবার সকালে আল্লামা ইকবাল রোডের বহুতল ভবনগুলি পরিদর্শন করে ভবন নির্মাণ নিতীমালার ব্যাপক লঞ্ঘনের প্রমান পান। এসময় নিয়ম লংঘন করা ভবনগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তিনি তার কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
মেয়র প্রথমেই আল্লামা ইকবাল রোডের কাদের ভবনের সামনে থামেন। এ ভবনটি নির্মাণের সময় ভবনের চারদিকে তিনফুট করে জায়গা ছাড়লেও বর্তমানে তারা আবার সেই ছেড়ে যাওয়া জায়গা ভবনের ভেতরে দিয়ে নিয়ে নিয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারিরা মেপে এই নিয়ম লঞ্ঘনের প্রমান পান।
এলাহী ভিলা নির্মাণাধীন দশতলা বহুতল ভবন। কিন্তু এর মালিক মোহাম্মদ মাকসুদ এলাহী তার ভবনের সামনে, পাশে কোথাও একটুও জায়গা ছাড়েননি। তিনি বিদ্যুতের যে মেইন লাইন থেকে বহুতল ভবনে লাইন নিয়েছেন সেই মেইন লাইনের ক্যাবল টানা হয়েছে এলাহী ভিলার সামনে সিটি কর্পোরেশনের জায়গা দখল করে মাত্র দুই ইঞ্চি গভীর দিয়ে। ফলে কোনো কারনে বিদ্যুতের লাইন লিক হলে ভয়াবহ দূর্ঘটনার আশংকা থাকে। তিনি এ ভবনে ওঠার সিড়ি নির্মাণ করেছেন যে জায়গা ছেড়ে দেয়ার কথা সেখানে। আন্ডারগ্রাউন্ডে গাড়ি রাখার জায়গা রাখা হলেও সেখানে গাড়ি যাওয়ার পর্যাপ্ত জায়গা রাখা হয়নি। এসব অভিযোগের ব্যাপারে মাকসুদ এলাহী জানান, তিনি অচিরেই বিধিমালা অনুযায়ী ভবনের জায়গা ছেড়ে দেবেন। অন্যান্য নিয়মও সিটি কর্পোরেশনের নির্দেশনা অনুযায়ী মেনে ভবন ঠিক করে নেবেন।
সাত্তার টাওয়ার যে জায়গা ছেড়েছিলো উপর দিয়ে আবার সেটি বাড়িয়ে দিয়ে সেখানে বেশ কয়েকটি টয়লেট নির্মাণ করেছে। এসব টয়লেটের পাইপ রাস্তার উপর ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। এসব পাইপ লিক হয়ে প্রায়ই পানি পড়ে বলে এলাকাবাসি জানান। এ ভবনের অন্যতম মালিক খালেদ ভূইয়া জানান, এই পাইপের পানি যাতে রাস্তায় না পড়ে এজন্য পাইপের নিচে পাকা ফলস ছাঁদ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
মোহাম্মদ রতন তার গাড়ি নামার রাস্তা ও ভবনের একাংশ সিটি কর্পোরেশনের রাস্তার উপর নিয়ে এসেছেন বলে সিটি কর্পোরেশনের সার্ভেয়ার দেখতে পান। পরিতোষ কান্তি সাহা ও মোহাম্মমদ দুলাল মিয়া-ও যথযাথভাবে জায়গা না ছেড়ে ভবন নির্মাণ করেছেন বলে সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা মেপে দেখতে পান।
পরে মেয়র বালুরমাঠ এলাকায় এলাকায় এলাকাবাসি অভিযোগ করেন, এখানে আবাসিক এলাকায় সুগন্ধা নামের একটি বেকারি গড়ে তোলা হয়েছে। এ বেকারির বর্জ্য সরাসরি ফেলা হচ্ছে ড্রেনে। রাসায়নিক পদার্থ মেশানো এ বর্জ্য পাথরের মতো শক্ত হয়ে যায়। ফলে ড্রেন সহজেই ভরে যায়। অল্প বৃষ্টি হলেই গলাচিপা এলাকার পানি আটকে থাকছে।
পরিদর্শন শেষে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা লংঘন করা সবগুলি ভবনকে নিয়ম অনুযায়ী ভবনের অতিরিক্ত অংশ ভেঙ্গে ফেলতে চিঠি দেয়া হবে। না ভাংলে সিটি কর্পোরেশন ভেঙ্গে দেবে। প্রয়োজনে এদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর বহুতল ভবন নির্মাণ হচ্ছে। বিধিমালা মেনে ভবন না মানা ভবনগুরিল বিরুদ্ধে আগেও আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রক্রিয়াটি আরো জোরদার করতে আমি সরেজমিনে পরিদর্শন করছি। সুগন্ধা বেকারির বিরুদ্ধে সিটি কর্পোরেশনের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বিধিমালা না মানা ভবনগুলোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে রাজউককে আরো সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান।#